মোঃ মাহফুজুর রহমান ফরহাদ
ইটনা (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বাজার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার পশ্চিমে, শান্ত ও মনোরম বড়হাটি গ্রামে দাঁড়িয়ে আছে এক রহস্যময় প্রাচীন স্থাপনা তিন গম্বুজওয়ালা গায়েবি মসজিদ। স্থানীয়ভাবে কেউ একে বলেন ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ, কেউবা বড় মসজিদ নামে চেনেন। তবে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেয়েছে ‘গায়েবি মসজিদ’ নামেই।
মসজিদের খতিব কারী মাওলানা আজিজুল হক মীর সাহেব জানান,
গায়েব বলতে কিছু নেই, একমাত্র আল্লাহই আলিমুল গায়েব। তবে এই মসজিদটি কে বা কারা নির্মাণ করেছেন, সে সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য বা শিলালিপি পাওয়া যায়নি। সেই রহস্য থেকেই লোকমুখে একে ‘গায়েবি মসজিদ’ বলা হয়।”
আশ্চর্য বৈশিষ্ট্য
এই মসজিদের অন্যতম বিস্ময় হলো এর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। গরমের দিনে ভেতরে প্রবেশ করলেই পাওয়া যায় শীতল পরশ, আর শীতকালে ভেতরটা হয়ে ওঠে আশ্চর্যরকম উষ্ণ। শত বছরের পুরনো স্থাপত্যে এমন প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এখনো বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের বিষয়।
মসজিদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
যদিও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে মসজিদ নির্মাতার নাম ও সঠিক নির্মাণকাল জানা যায়নি তবে ইতিহাসবিদদের ধারণা প্রায় ৪২৫ বছর আগে ঈশা খাঁর সভাসদ দেলোয়ার এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। সময়ের প্রভাবে আংশিক ক্ষয় হলেও, এর স্থাপত্যশৈলীতে এখনো মুগ্ধ হন দর্শনার্থীরা।
মসজিদে ভক্ত-পর্যটকদের ভিড়
প্রতিদিনই স্থানীয় মুসল্লি ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের ভিড়ে মুখর থাকে মসজিদ প্রাঙ্গণ। কেউ আসেন নামাজ আদায় করতে, কেউ আসেন ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখতে, আবার অনেকে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় তাবারক ও শিন্নি বিতরণ করেন।
ইটনার বড়হাটি গ্রামের এই গায়েবি মসজিদ শুধু একটি উপাসনালয় নয় — এটি কিশোরগঞ্জের অতীত ঐতিহ্য ও বিশ্বাসের এক জীবন্ত প্রতীক।